ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লক্ষাধিক পৌরবাসির জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিতে

চকরিয়ায় ২০ কিলোমিটার টেকসই শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে মেয়রের আবেদন: মন্ত্রীর সুপারিশ সহকারে নির্দেশনা

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার লক্ষাধিক জনগণের জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিতে অবশেষে ২০ কিলোমিটার এলাকায় টেকসই পৌরশহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী।
রোববার ২৭ আগস্ট পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া আবেদনপত্রটি আমলে নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সুপারিশ সহকারে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালককে এব্যাপারে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি।

মেয়র আলমগীর চৌধুরী আবেদনপত্রে চকরিয়া পৌর শহররক্ষা বাঁধের ১ নম্বর গাইড বাঁধ তথা চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোচপাড়া হয়ে চিরিঙ্গা মাতামুহুরী ব্রীজ পর্যন্ত এবং মাতামুহুরী ব্রীজ হয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেতুয়াবাজার ব্রীজ ঘুরে বাটাখালী ব্রীজ হয়ে সওদাগরঘোনা আলাউদ্দিনের টেক পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ীভাবে টেকসই শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।

আবেদনপত্রে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেছেন কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা ১৫ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা ও লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত একটি প্রথমশ্রেণীর পৌরসভা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে চকরিয়া পৌরসভার চারিদিকে চকরিয়া উপজেলার সঙ্গে পাশের ৫টি উপজেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, কক্সবাজারের মহেশখালী কুতুবদিয়া ও পেকুয়া উপজেলার সংযোগস্থল ( টার্নিং পয়েন্ট)।

মুলত ৬ উপজেলার সংযোগস্থল চকরিয়া পৌরসভার প্রাণকেন্দে হওয়ায় ইতোমধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার, শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে অভাবনীয় চাহিদা , ছোট-বড় শিল্প কারখানা স্থাপন, আবাসিক নগরায়ন সৃষ্টি ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। পাশাপাশি মহেশখালী মাতারবাড়িতে চলমান সরকারের মেগাউন্নয়ন প্রকল্প গভীর সমুদ্র বন্দর, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়োজিত দেশী বিদেশী প্রকৌশলী থেকে শুরু করে সকলস্থরের কর্মকর্তারা আবাসন সুবিধার নিরাপদ জোন হিসেবে গড়ে উঠেছে চকরিয়া পৌরসভা এলাকা।

আবেদনপত্রে মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির ফলে বর্তমানে চকরিয়া পৌরসভার প্রতিটি জনপদ এখন অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু পৌরসভার তিনদিক থেকে প্রমক্তা মাতামুহুরী নদীর অবস্থান হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যার তান্ডবে নদীর তীর লাগোয়া চকরিয়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনের হোলিখেলা চলে। তাতে প্রতিবছর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে জনসাধারণ যেমন ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন, তেমনি সরকারেরও শতকোটির রাস্তাঘাট বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এসব কারণ উল্লেখ্য করে প্রতিবছরের ভয়াবহ বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিসাধন থেকে স্থায়ীভাবে লক্ষাধিক পৌরবাসির জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত কল্পে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে টেকসই চকরিয়া শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণে লিখিতভাবে দাবি জানিয়েছেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) মেয়র আলমগীর চৌধুরীর সেই আবেদনপত্রে সুপারিশ সহকারে তড়িৎ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি।

গতকাল ঢাকা থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে টেকসই চকরিয়া পৌরসভার শহর রক্ষাবাঁধ নির্মাণে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দিই। গতকাল পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি এ বিষয়ে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মহোদয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কতৃক স্থায়ীভাবে টেকসই চকরিয়া পৌরশহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হলে ইনশাআল্লাহ আগামীতে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার সময় চকরিয়া পৌরবাসিকে দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা। আমি সবসময় পৌরবাসির পাশে আছি। ভালো কাজের জন্য সকলের দোয়া, ভালবাসা ও সহযোগিতায় কামনা করছি। ##

পাঠকের মতামত: